স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলামসহ তিন জনকে আসামি করে চাঁদাবাজির অভিযোগে আদালতে একটি মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার কেশবপুরের ব্রক্ষ্মকাটি গ্রামের খন্দকার রফিকুজ্জামানের ছেলে মিশাল ক্যাবল নেটওয়ার্ক এন্ড এন্টারপ্রাইজের মালিক খন্দকার মফিদুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গৌতম মল্লিক অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন পিবিআইকে।
আসামিরা হলো ভোগতি নন্দ্রেপুর গ্রামের মৃত শামসুদ্দিন মোড়লের ছেলে পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, বালিয়াডাাঙ্গা গ্রামের মৃত নুর আলীর খাঁর ছেলে মফিজুর রহমান খাঁ ও কান্তা বাড়ইহাটি গ্রামের আবুবকর সিদ্দিকের ছেলে আলমগীর সিদ্দিক।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, খন্দকার মফিদুল ইসলাম মিশাল ক্যাবল নেটওয়ার্ক এন্ড এন্টারপ্রাইজের মালিক। তিনি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে উপজেলার ব্রক্ষ্মকাটি, বালিয়াডাঙ্গা, ও রামচন্দ্রপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে সুনামের সাথে ডিস ব্যবসা করে আসছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে পৌর মেয়র অপর দুই আসামিকে পাঠিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। মাসে মাসে চাঁদার টাকা না দিলে ভয়ভীতি দেখাতো। শান্তিতে ব্যবসা করার লক্ষ্যে তিনি মফিজুর ও আলমগীরকে ১ লাখ টাকা চাঁদা দেন। কিছুদিন পর আলমগীর ১ লাখ টাকা নিয়ে মেয়রের সাথে তাকে দেখা করতে বলেন। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার কারয় গত ১৫ জুন মফিদুলকে পুরাতন বাসস্টান্ডে একা পেয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্টাম্পে স্বাক্ষর করে নেন। ৩০ জুলাই আসামিরা লোকজন নিয়ে তার ডিস ব্যবসার অফিসে যেয়ে তাকে মারপিট করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা না দিলে খুন জখম করবে বলে হুমকি দেন। এরমধ্যে লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা চলে যান। এব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়ায় তিনি এ মামলা করেছেন।
জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে দুটি মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে যশোর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার আদালতে মামলা হয়েছে। শহরের সিটি কলেজপাড়ার রুহুল আমিনের ছেলে ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান রানা মামলাটি করেছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সাইফুদ্দীন হোসাইন অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে আদেশ দিয়েছেন।
সাবেক পৌর কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা বাদে অপর আসামিরা হলেন, মোছা. ফাতেমাতুজ জোহরা, তার মা মোছা. হাফিজা বেগম এবং ভাই সোনা মিয়া ও মহাসিন আলী। তবে মামলায় আসামি মোছা. ফাতেমাতুজ জোহরা এবং মা ও ভাইদের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি।
ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান রানা মামলায় উল্লেখ করেছেন, অন্যায়ভাবে মোটা অংকের টাকা আদায়ের জন্য আসামিরা একজোট হয়ে ষড়যন্ত্রমূলক বিয়ের কোনো প্রমাণপত্র ছাড়াই ফাতেমাতুজ জোহরাকে স্ত্রী সাজিয়ে সাইদুর রহমান রানার বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মিথ্যা মামলা করেন। যার সিআর নং-৩৮/২১। এই মিথ্যা মামলা দায়ের পর আসামিরা তার কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। তাকে বলা হয়, ৩ লাখ টাকা দিলে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা যৌতুক নিরোধ আইনের মামলাটি প্রত্যাহার করে নিবেন তারা। কিন্তু তিনি তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে তারা তাকে গালিগালাজ করেন এবং তার বিরুদ্ধে আরও মিথ্যা মামলা দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার হুমকি দেয়া হয়। সেই সাথে তারা হুমকি দিয়ে একথা বলেন যে, তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা আদায় করে ছাড়বেন। এ ঘটনার পর গত ১০ জুন সাইদুর রহমান রানা সদর সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালত হতে একটি মামলার সমন হাতে পান, যার নং-৪১/২১। পরে মামলার নকল তুলে জানতে পারেন, ফাতেমাতুজ জোহরা এবং তার সাথে অভি রহমান নামে একটি শিশুকে বাদী বানিয়ে দেনমোহর, ভরনপোষণ ও খোরপোষ দাবি করে সাইদুর রহমান রানার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি (নং-৪১/২১) করেছেন। এই মামলায় বিয়ের প্রমাণ হিসেবে জাল প্রত্যায়নপত্র দাখিল করা হয়েছে। কিন্তু স্ত্রী দাবি করলেও ফাতেমাতুজ জোহরার সাথে তার আদৌ বিয়ে হয়নি এবং অভি রহমান তার ঔরসজাত সন্তান নয়। মূলত সাইদুর রহমান রানার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের জন্য আসামিরা জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ কারণে তিনি সুবিচার পেতে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে এই মামলা করেছেন।