গাজী আব্দুল কুদ্দুস, চুকনগর : পরিবহন খাতে এই মুহূর্তে সরকারের বড় চ্যালেজ্ঞ দূর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করে প্রাণহানী কমানো। সড়ক, যানবাহন এবং দক্ষ চালক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলার মূল নিয়ামক। কিন্তু দেশে কোনোটিই ত্রূটিমুক্ত নয়। ফলে সড়ক দূর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আসছে না। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে গল্লামারী-চুকনগর পর্যন্ত অবাধে মহাসড়কে চলাচল করছে থ্রী-হুইলার যানবাহন। যে কারনে ঘটছে প্রতিনিয়ত মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনা। ঝরে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ। অদক্ষ ড্রাইভার, ফিটনেসবিহীন গাড়ী, ট্রাফিক আইনের কোনো ধারনা নাই এমন ড্রাইভার মহাসড়কে থ্রী-হুইলার যানবাহন নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে যাত্রীদের জীবন। কোনোভাবেই থামছে না তাদের দৌরাত্ম্য।
খোজ নিয়ে জানা যায়, ডুমুরিয়া থেকে গল্লামারী পর্যন্ত প্রায় ১৫০ টি মাহেন্দ্র প্রতিদিন চলাচল করে। তারা অবৈধভাবে মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে স্ট্যান্ড তৈরী করে নিয়েছে ডুমুরিয়ায়। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা যায় তাদের এসমস্ত অবৈধ যান চলাচলে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক আশীর্বাদ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে অনেক মাহেন্দ্রা চালক বলেন, ডুমুরিয়া থেকে গল্লামারী পর্যন্ত আমরা প্রায় ১৫০জন মাহেন্দ্রা চালক। প্রত্যেকদিন গাড়ি প্রতি আপ-ডাউনে ৪০টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। সেক্ষেত্রে প্রতি ড্রাইভার ৩/৪ টি টিপ পায়। এতে প্রতিদিন চাঁদা ওঠে প্রায় ১৮/২৪ হাজার টাকা। এছাড়া মাসিক চাঁদা দিতে হয় ১হাজার টাকা। ১৫০টি গাড়ি থেকে মোট মাসিক চাঁদা আদায় ১লক্ষ ৫০হাজার টাকা। এছাড়াও রয়েছে প্রতিটি গাড়ির ভর্তি বানিজ্য। সেক্ষেত্রে গাড়ি প্রতি ৫হাজার থেকে ১০হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। যে দিতে পারে না তাকে গাড়ি চালাতে দেওয়া হয় না। এই চাঁদার টাকা কি হয় কোথায় যায় চালকেরা কিছুই জানে না। আমরা চালক, অসহায় গরিব মানুষ। ধার-দেনা, কিস্তি করে গাড়ি কিনে আমাদের সংসার চলে না। অথচ প্রতিদিন স্ট্যান্ডের চাঁদা দিতে হয়। এরপরও রয়েছে পুলিশের ঝামেলা। মহাসড়কে চলাচল করতে গিয়ে পুলিশ মামলা দেয় এবং মাহেন্দ্রা আটক করে। সেক্ষেত্রে যে সমস্ত নেতারা টাকা নেয় তাদেরকে বললে কোনো ফল হয় না।
খুলনা থেকে ডুমুরিয়ায় চলাচলকারী যাত্রীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের ডুমুরিয়া থেকে খুলনায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। ডুমুরিয়া এখন সড়ক দূর্ঘটনার মৃত্যুকূপ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এখানে যেসব অবৈধ থ্রী-হুইলার যানবাহন সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে মহাসড়কে চলাচল করছে। তাদেরকে সহোযোগিতা করছেন এক শ্রেণীর অসাধু রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশ প্রশাসন। আমরা এর প্রতিকার চাই। একারনে গত ২৬সেপ্টেম্বর ট্রাকের ধাক্কায় মাহেন্দ্র খাদে পড়ে ঘটনাস্থলে ৫ জন নিহত হয়। এরপর ২৯সেপ্টেম্বর বৃদ্ধ, ৫অক্টোবর ফুটবল খেলোয়াড় ও ১৬অক্টোবর মোটরসাইকেল আরোহী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়,
নিরাপদ সড়ক চাই ডুমুরিয়া উপজেলা শাখার আহ্বায়ক খান মহিদুল ইসলাম বলেন,” নিরাপদ সড়ক চাই একটি জাতীয় সামাজিক সংগঠন। আমরা প্রতিনিয়ত সড়ক দূর্ঘটনা রোধে কাজ করে চলেছি। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেসী মহল ব্যক্তিস্বার্থের জন্য সড়ক প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশে সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে সড়কে অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছে। যে কারনে মহাসড়কে অবৈধ থ্রী-হুইলার যানবাহন চলাচল থামছে না। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। সাথে সাথে সকলকে সতর্ক ও সচেতন হয়ে পথ চলার আহ্বান জানাই।