স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে চালককে গলাকেটে হত্যার পর ইজিবাইক ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত ইজিবাইক চালক যশোর সদর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মোজাদুল জামানের ছেলে আব্দুল্লাহ (১৮)। আব্দুল্লাহ যশোর মুসলিম এইড ইনস্টিটিউটের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে হাসিব (১৯) নামে একজন আটক হয়েছে। সেই সাথে ছিনতাই হওয়া ইজিবাইকটি উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতের পিতা মোজাদুল জামান জানিয়েছেন, দুই ছেলের মধ্যে আব্দুল্লাহ ছোট। লেখাপাড়ার পাশপাশি সে ইজিবাইক চালাতো। গত মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ইজিবাইক নিয়ে বের হয় আব্দুল্লাহ। তার মাকে সন্ধ্যার সময় ডাক্তার দেখানোর কথা ছিলো। বিকেলে আব্দুল্লাহ’র মোবাইলে ফোন দিলে সে যাত্রী নিয়ে ঝিকরগাছার গদখালীতে যাচ্ছে বলে জানায়। সন্ধ্যার দিকে সে ফিরে আসে এবং ঘুরুলিয়া সাদ্দামের মোড়ে আবস্থার করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সে বাড়ির দিকে রওনা হয়, বলে মোবাইলে আমাকে জানায়। কিন্তু আর ফেরেনি। রাত ১০ টা পর্যন্ত না ফেরায় বাড়ির ও এলাকার লোকজন খোঁজখবর নিতে থাকে। এক পর্যায়ে ঘুরুলিয়া থেকে ছোট গোপালপুর যেতে বেলের মাঠ নামকস্থানে রাস্তার পাশে তার মরদেহ দেখতে পায় এলাকার লোকজন। পরে পুলিশে সংবাদ দেয়া হলে পুলিশ রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে হাসিবুর রহমান হাসিব (১৯) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। হাসিব সদর উপজেলার তফর নওয়াপাড়া এলাকার আব্দুল গণির ছেলে। আর হাসিবের সঙ্গি আরিফ হোসেন (১৯) পলাতক রয়েছে। আরিফ শহরের পূর্ববারান্দী নাথ পাড়ার ফারুক হোসেনের ছেলে। ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক উদ্ধারসহ একটি চাকু ও নিহতের মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে ইজিবাইক চালক আব্দুল্লাহকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইজিবাইক চালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি যশোর শাখার সদস্যরা। বুধবার দুপুরে তারা হত্যাকারীদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছিল। রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হাসিবুর রহমানকে আটক করেছে। সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। তার সঙ্গী আরিফ পলাতক রয়েছে। ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক ও একটি চাকু এবং নিহতের একটি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। হাসিবের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুসারে পুলিশ আরো জানিয়েছে, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে হাসিব ও আরিফ ঘুরুলিয়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। সুলতানপুরে যাওয়ার কথা বলে আব্দুল্লাহর ইজিবাইকটি তারা ভাড়া করে। বেলের মাঠে পৌছালে আরিফ প্রথমে আব্দুল্লাহকে মারপিট করে। তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে সে মাটিতে পড়ে যায়। পরে দুইজন মিলে আব্দুল্লাহর গলাকেটে হত্যা করে লাশ ফেলে দিয়ে ইজিবাইক নিয়ে চম্পট দেয়। আসামি হাসিব একটি কসমেটিকসের দোকানের কর্মচারি আর আরিফ পাইপ মিস্ত্রি।